Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

অম্লীয় মাটি ব্যবস্থাপনায় ডলোচুন প্রয়োগ প্রযুক্তি

অম্লীয় মাটি ব্যবস্থাপনায় ডলোচুন প্রয়োগ প্রযুক্তি
ড. মোঃ নূরুল ইসলাম
মাটির অম্লত্ব কিংবা ক্ষারীয় অবস্থার উপর ফসলের বৃদ্ধি ও ফলন অনেকাংশে নির্ভর করে। মাটির অম্লতা ও ক্ষারত্ব নির্ধারিত হয় মাটির পিএইচ (ঢ়ঐ) নির্ণয়ের মাধ্যমে মাটির পিএইচ মান সাধারণত ৪.০ থেকে ৮.০ মধ্যে থাকবে। মাটির পিএইচ (ঢ়ঐ)  মান ৪.৫ এর নিচে হলে সেই মাটিকে অত্যধিক অম্ল, ৪.৫ থেকে ৫.৫ পর্যন্ত অধিক অম্ল, ৫.৬ থেকে ৬.৫ হলে মৃদু অম্ল এবং ৬.৬ থেকে ৭.৩ এর মধ্যে হলে তাকে নিরপেক্ষ মাটি বলা হয়। ফসলের বৃদ্ধির জন্য ১৬-১৭টি অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন। এর মধ্যে গাছ কার্বন, অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন বাতাস ও পানি থেকে গ্রহণ করে। অবশিষ্ট সকল আবশ্যিক উপাদান মাটি থেকে গ্রহণ করে। মাটির পিএইচ এর মান ৫.৬ থেকে ৭.৩ এর মধ্যে থাকলে অর্থাৎ মৃদু অম্ল থেকে মৃদু ক্ষারীয় মাটিতে এসব পুষ্টি উপাদান ফসলের জন্য সহজলভ্য হয়। এই পিএইচ মান সম্পন্ন মাটি, মাটিতে অবস্থিত অণুজীবসমূহের বংশ বৃদ্ধির জন্য অনুকূল, যা ফসলের জন্য আবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদানের লভ্যতা বৃদ্ধি করে। বাংলাদেশে মোট ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ৮৫ লাখ ৮৬ হাজার হেক্টর (ঝজউও, ২০২০)। এর মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৭৮ হাজার হেক্টর জমির মাটি অত্যধিক অম্ল (পিএইচ মান ৪.৫ এর নিচে) এবং  প্রায় ৩৬ লাখ ৪৪ হাজার হেক্টর জমির মাটি অধিক অম্ল (পিএইচ মান ৪.৫ থেকে ৫.৫) (ঝজউও, ২০২০), অত্যধিক থেকে অধিক অম্লীয় মাটিতে ফসফরাস, ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও মলিবডেনামের স্বল্পতা এবং অ্যালুুমিনিয়াম, আয়রন ও ম্যাঙ্গানিজের আধিক্য থাকায় ফসলের বৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয় এবং ফলন হ্রাস পায়।
বৃহত্তর রংপুর, দিনাজপুর, সিলেট, চট্রগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলসহ বরেন্দ্র ও মধুপুর গড় অঞ্চলের অধিকাংশ মাটি অত্যধিক থেকে অধিক অম্ল (চিত্র ১: মানচিত্রের গাঢ় লাল ও ম্যাজান্টা অংশ)। ফলশ্রুতিতে, এই সকল অঞ্চলে আবাদকৃত ফসলের কাক্সিক্ষত ফলন পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কাক্সিক্ষত ফলন পেতে হলে এ ধরনের মাটির অত্যধিক ও অধিক অম্লতা হ্রাস করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা আবশ্যক। ভালো ফসল উৎপাদনের নিমিত্ত মাটির অনুকূল পরিবেশ নিশ্চিত করার প্রয়োজনে মাটির অম্লমান (পিএইচ) ৫.৬ বা এর উপর আসতে হবে। বাংলাদেশের বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের মাটিতে ক্যালশিয়াম, ম্যাগনেশিয়ামসহ অন্যান্য ক্ষারীয় উপাদানের ঘাটতি রয়েছে যা মাটির অম্লতা বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ। দেশের প্রায় ২১ লাখ হেক্টর জমিতে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ নিম্ন থেকে অতি নিম্ন এবং প্রায় ১১ লাখ হেক্টর জমিতে ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ নিম্ন থেকে অতি নিম্ন।
অম্লীয় মাটি ব্যবস্থাপনা
গবেষণালব্দ ফলাফল হতে জানা যায় যে, বিভিন্ন ফসলে সুপারিশকৃত মাত্রায় ডলোচুন (ঈধঈঙ৩.গমঈঙ৩) প্রয়োগের মাধ্যমে অত্যধিক ও অধিক অম্লীয় মাটির অম্লতা হ্রাস করে ফসল উৎপাদনের জন্য অধিক উপযোগী পর্যায়ে (পিএইচ মান ৫.৬ এর উপরে) নিয়ে আসা সম্ভব। ডলোমাইট বা ডলোচুনে ক্যালশিয়ামের পরিমাণ ২০ শতাংশ এবং ম্যাগনেশিয়ামের পরিমাণ ১১ শতাংশ বিদ্যমান থাকায় ডলোচুন অত্যধিক ও অধিক অম্লীয় মাটির অম্লত্ব হ্রাস করার জন্য খুবই উপযোগি।
ডলোচুন ব্যবহারের সুপারিশকৃত মাত্রা : ডলোচুন একটি সাদা পাউডার জাতীয় দ্রব্য যা বাজারে ডলোচুন, ডলোঅক্রিচুন বা ডলোমাইট নামে পাওয়া যায়। বাংলাদেশের মাটির অম্লীয়তা কমানোর জন্য ডলোচুনের সুপারিশকৃত মাত্রা প্রধানত : মাটির বর্তমান অম্লমান (পিএইচ), মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ও মাটির বুনটের উপর নির্ভর করে। গবেষণার ফলাফলের ভিত্তিতে, সাধারণত প্রতি শতাংশ জমিতে ৪ কেজি বা একরে ৪০০ কেজি বা হেক্টরে ১ টন হিসাবে ডলোচুন প্রয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। এই মাত্রায় ডলোমাইট বা ডলোচুন প্রয়োগ করা হলে মাটির অম্লতা হ্রাস পাবে এবং ফসলের কাক্সিক্ষত ফলন পাওয়া যাবে। তবে, মাটির পিএইচ মান, মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমাণ ও মাটির বুনটের উপর ভিত্তি করে ডলোচুনের সুপারিশকৃত মাত্রা এর কম বা বেশিও হতে পারে।
ডলোচুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সুবিধা : ডলোমাইট বা ডলোচুনে ঈধ ও গম থাকে যা ফসলের জন্য অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান; ডলোচুন প্রয়োগ প্রযুক্তি খুব সহজ, খরচ কৃষকের সামর্থের মধ্যে এবং লাভজনক; ডলোচুন একবার প্রয়োগ করলে পরবর্তী তিন বছর প্রয়োগের প্রয়োজন হয় না; ডলোচুন প্রয়োগ করা হলে ম্যাগনেশিয়াম জাতীয় সার আলাদাভাবে প্রয়োগের প্রয়োজন হয়; গবেষণায় দেখা গেছে যে, অধিক অম্লীয় মাটিতে ডলোচুন প্রয়োগ করা হলে বিশেষ করে আলু, ডাল, সরিষা ও সবজি জাতীয় ফসলের ফলন প্রায় ১৫-৪০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।
ডলোচুন প্রযুক্তি প্রয়োগ পদ্ধতি : প্রথমেই জমির অম্লীয় মাত্রা জেনে নিয়ে প্রতি শতাংশে ৪ কেজি/প্রয়োজনমত হারে অর্ধেক ডলোর সমস্ত জমির জন্য প্রয়োজনীয় ডলোচুন মেপে নিয়ে জমিতে জো থাকা অবস্থায় উত্তর-দক্ষিণ বরাবর এবং বাকি অর্ধেক পূর্ব-পশ্চিম বরাবর অর্থাৎ আড়াআড়িভাবে সমস্ত জমিতে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। জমি শুষ্ক হলে হালকা সেচ দিয়ে জো নিয়ে আসার পর ডলোচুন প্রয়োগ করা এবং ডলোচুন প্রয়োগের সাথে সাথেই জমি আড়াআড়ি চাষ ও মই দিয়ে ডলোচুন সুন্দরভাবে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। সাধারণত ডলোচুন প্রয়োগের ১৫ দিন পর, তবে কমপক্ষে ১০ দিন পর প্রয়োজনীয় চাষ ও মই দিয়ে ফসল রোপণ/ বপনের জন্য উপযুক্ত।
ডলোচুন প্রয়োগের সময় ও ফসল : সাধারণত রবি মৌসুম ডলোচুন প্রয়োগ করা উত্তম  সময়। তবে যেকোন মৌসুমেই বিভিন্ন  মাঠ ফসল যথা- গম, ভুট্টা, আলু, সবজি, ডাল ও মসলাজাতীয় ফসলে ফলন বৃদ্ধির জন্য অধিক অম্লীয়  মাটিতে ডলোচুন প্রয়োগ করা যেতে পারে। সাধারণত ধান ফসলে অথবা জলাবদ্ধ অবস্থায় আবাদ করা হয় এমন ফসলে ডলোচুন প্রয়োগ করা হয় না। তবে ধান ফসলের জমিতে ডলোচুন প্রয়োগ করা হলে ডলোচুনে থাকা ক্যালশিয়াম ও ম্যাগনেশিয়ামের কারণে ফলন বৃদ্ধি পেতে পারে।
ডলোচুন প্রযুক্তি ব্যবহারের সাবধাণতা : সুপারিশকৃত মাত্রার চেয়ে অধিক পরিমাণে ডলোচুন প্রয়োগ করবেন না; ডলোচুন প্রয়োগের পরপরই চাষ ও মই দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দিন; ফসল আছে এমন জমিতে ডলোচুন প্রয়োগ করা যাবে না; বেশি বাতাসের সময় মাঠে ডলোচুন না ছিটানো ভালো; ডলোচুন প্রয়োগের সময় চুন প্রয়োগকারীকে অবশ্যই মাস্ক অথবা কাপড় দিয়ে ভালভাবে নাক মুখ বেঁধে নিতে হবে এবং চমশা ব্যবহার করতে হবে। তথ্যসূত্র : এঁরফবষরহব ভড়ৎ অপরফরপ ঝড়রষ গধহধমবসবহঃ, ঝজউও, ২০২২

লেখক : প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, আঞ্চলিক কার্যালয়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, মোবাইল : ০১৭১৮৯৩৭৯১৯, ই-মেইল : nurulsrdi78@gmail.com

 


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon